Wednesday 8 January 2014

সুপরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে: বিজেপি

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিজেপির মুখপাত্র নির্মলা সীতারামন
বাংলাদেশে সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনের পর সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার যে সব ঘটনা ঘটেছে, তার নিন্দায় সরব হয়েছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি।
দিল্লিতে আজ বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও হিন্দুরা সেখানে যেভাবে অত্যাচারিত হচ্ছেন – তাতে তাদের পক্ষে চুপ করে থাকা সম্ভব নয়।

দিল্লির অশোকা রোডে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজকের সাংবাদিক বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে প্রথমেই যে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়, তা হল বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন।এই ধরনের নির্যাতন বন্ধ করতে কূটনৈতিক মাধ্যমে যাতে বাংলাদেশের সাথে আলোচনা শুরু করা হয়, তার জন্য ভারত সরকারের কাছেও দাবি জানিয়েছে বিজেপি – তবে সরকারের কাছ থেকে এখনও এ ব্যাপারে কোনও বিবৃতি বা প্রতিক্রিয়া আসেনি।
দেশের প্রধান বিরোধী দলের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র নির্মলা সীতারামন সেখানে বলেন, বাংলাদেশে ভোটের পর থেকেই সুপরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের আক্রমণের নিশানা করা হচ্ছে।
"সেই সঙ্গেই আমরা দাবি করব, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যাতে এই ঘটনাগুলো বিবেচনায় নেয় এবং যথাযথ কূটনৈতিক পন্থায় এর প্রতিকারের চেষ্টা শুরু করে।"
বিজেপির মুখপাত্র নির্মলা সীতারামন
তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর যেভাবে ধারাবাহিক হামলার ঘটনা ঘটছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সার্বিক স্থিতিশীলতা এতে নষ্ট হচ্ছে – আর হিন্দুদের জীবন, সম্পত্তি – সর্বস্ব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছেন হিন্দু মহিলারা।’
মিস সীতারামন আরও জানান, ‘হামলাগুলো সবচেয়ে বেশি ঘটছে বাংলাদেশের হিন্দু-অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেই, আমরা যেমন বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, যশোর বা চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দুদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাচ্ছি।’
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু-নির্যাতনের খবরের বিভিন্ন ক্লিপিংস ও ছবিও বিলি করা হয়।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গেই একই ব্র্যাকেটে বাংলাদেশকে বসিয়ে বিজেপি নেতারা বলেন – প্রতিবেশী দুটো দেশেই যেভাবে হিন্দুরা নির্যাতিত হচ্ছেন, সেটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।
এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আঞ্চলিক সুস্থিতি ও সম্প্রীতিও ভীষণভাবে ব্যাহত হবে বলে দাবি করেন তারা।
নির্মলা সীতারামন বলেন – এই বিষয়টা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হতে পারে, কিন্তু পরিস্থিতি এখন যে পর্যায়ে গেছে তাতে ভারতের বিরোধী দল নীরব থাকতে পারছে না।
তাঁর কথায়, ‘সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হচ্ছেন বলেই আমরা উদ্বিগ্ন। জানি এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় – কিন্তু হামলাগুলো ভয়ঙ্কর, তাই উদ্বেগ ব্যক্ত না-করেও আমরা পারছি না।’
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় মন্দিরে আক্রমনের ঘটনা ঘটেছে।
মিস সীতারামন আরও বলেন, ‘সেই সঙ্গেই আমরা দাবি করব, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যাতে এই ঘটনাগুলো বিবেচনায় নেয় এবং যথাযথ কূটনৈতিক পন্থায় এর প্রতিকারের চেষ্টা শুরু করে।’
বিজেপির দিক থেকে প্রবল চাপ আছে ঠিকই – তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অস্বস্তি বাড়তে পারে, এই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে ভারত সরকার এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি।
বাংলাদেশে নির্বাচনের পর সোমবারের জারি করা বিবৃতিতে তারা সার্বিকভাবে হিংসা-র নিন্দা করেছে ঠিকই, কিন্তু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে এখনও কোনও শব্দ খরচ করেনি।
তবে বিজেপি বলছে – প্রতিবেশী দেশে হিন্দুদের এত বড় বিপদে তারা যেমন সরব হয়েছেন, তেমনি ভারত সরকারেরও এই পরিস্থিতিতে নীরব থাকা সাজে না।

No comments:

Post a Comment