রাজশাহী : গতকাল শনিবার রাজশাহীর কাজলায় ১৮ দলের সমাবেশে পুলিশের গুলীতে (বামে) শিবির কর্মী রাশেদ নিহত হয়-সংগ্রাম
রাবি রিপোর্টার : গতকাল শনিবার বিকালে রাজশাহী নগরীর কাজলায় হরতালের সমর্থনে আয়োজিত ১৮ দলীয় জোটের এক সমাবেশে গুলী চালিয়েছে পুলিশ। এতে রাশেদুল ইসলাম রান্টু (২৩) নামে ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক নেতা নিহত হন। এছাড়া ১৮ দলীয় জোটের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। নিহত রাশেদ নগরীর ২৯নং ওয়ার্ড শিবিরের অর্থ সম্পাদক। তিনি নগরীর মতিহার থানার ডাঁশমারী এলাকার আমিনুল ইসলাম টুকুর ছেলে ও ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি কোর্সের ছাত্র ছিলেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কাজলা এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনায় সিটি কর্পোরেশনের ২৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা আশরাফুল ইসলাম বাচ্চু, মতিহার থানা ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউলসহ ৫০ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে অন্তত ২০জন গুলীবিদ্ধ হয়েছেন বলে ১৮দলের নেতারা দাবি করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে ২৫ জনকে আটক করা হয়। আহতদের নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশব্যাপী ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৬০ ঘণ্টা হরতালের সমর্থনে গতকাল বিকালে নগরীর কাজলা এলাকায় পথসভার আয়োজন করে ১৮দলীয় জোট। পথসভায় যোগ দিতে বিকেল তিনটা থেকেই কাজলা এলাকায় জড়ো হতে থাকেন নেতা-কর্মীরা। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে সমাবেশ শুরু হলে মতিহার থানা বিএনপির সভাপতির বক্তব্য চলাকালে পুলিশ সমাবেশস্থলে একযোগে গুলী ছোঁড়ে। এ সময় ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় পুলিশের গুলীতে রাশেদুল ইসলাম রান্টু নিহত হন। এসময় ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাসিকের ২৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম বাচ্চুসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন বলে জানা গেছে। একজন নিহতের সত্যতা স্বীকার করে মহানগর ডিবির এক কর্মকর্তা দাবি করেন, শিবির ক্যাডাররা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের একটি গাড়িতে হামলা ও ভাংচুর শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। এনিয়ে শিবির ক্যাডারদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসময় পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা সামান্য আহত হয়েছেন। এই কর্মকর্তার দাবি, “পুলিশের গুলীতে নয় বরং নিজেদের ছোঁড়া বোমা বিস্ফোরণে ডাসমারী এলাকার একজন নিহত হয়েছে।” তবে নিহত রাশেদের বাম বুকের নিচে গুলীর চিহ্ন দেখা যায়। তার লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ শত শত রাউন্ড রাবার বুলেট, টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। খবর পেয়ে র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে এ্যাকশনে যায়। সংঘর্ষে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মুহূর্তেই দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পথচারীরা আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করেন। রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শফিকুল হক মিলন জানান, ‘১৮ দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলা ও গুলীবর্ষণ করেছে। এতে আমাদের অন্তত ২০ নেতা-কর্মী গুলীবিদ্ধ হয়েছেন।’ রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান জানান, ‘আক্রান্ত হওয়ার পর পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ছররা গুলী ছুঁড়েছে। ছররা গুলীতে কেউ মারা যাওয়ার কথা নয়। তবে রাশেদুল কার গুলীতে মারা গেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
No comments:
Post a Comment